স্বামীকে লিভারের একটি অংশ দান করা এক নারী নিজেও মারা গেলেন, কয়েকদিন আগে মারা যান তার স্বামীও। এই ঘটনার পর ভারতের মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য বিভাগ পুনের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে নোটিশ দিয়েছে বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যসেবা উপপরিচালক ডা. নাগনাথ ইয়েমপল্লে রোববার বলেন, সাহ্যাদ্রি হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী সোমবারের মধ্যে ট্রান্সপ্লান্ট প্রক্রিয়া সংক্রান্ত সব তথ্য জমা দিতে।
তিনি বলেন, “আমরা হাসপাতালকে নোটিস পাঠিয়েছি এবং গ্রহীতা ও দাতার বিস্তারিত তথ্য, তাদের ভিডিও রেকর্ডিং এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়ার নথি চেয়েছি। সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে সব তথ্য দিতে বলা হয়েছে।”
রোগী বাপু কমকার ও তার স্ত্রী কামিনী, যিনি লিভারের একটি অংশ দান করেছিলেন, ১৫ আগস্ট ওই হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করান।
অস্ত্রোপচারের পর বাপু কমকারের অবস্থা অবনতি হয় এবং ১৭ আগস্ট তিনি মারা যান। কামিনী ২১ আগস্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তাদের পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
হাসপাতাল জানায়, অস্ত্রোপচারগুলো মানসম্মত চিকিৎসা প্রোটোকল মেনেই সম্পন্ন করা হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে হাসপাতাল বলে, “আমরা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছি। এই বিষয়টির বিস্তারিত পর্যালোচনা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও সহায়তা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
হাসপাতাল জানায়, বাপু কমকার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগী ছিলেন এবং তার নানা জটিলতা ছিল।
“এই কঠিন সময়ে কমকার পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা রইল। জীবিত দাতার লিভার প্রতিস্থাপন সবচেয়ে জটিল অস্ত্রোপচারগুলোর একটি, এবং এই ক্ষেত্রে রোগীর অনেক জটিলতা ছিল,” বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
হাসপাতাল আরও জানায়, সার্জারির ঝুঁকি সম্পর্কে পরিবার ও দাতাকে আগে থেকেই সম্পূর্ণভাবে অবগত করা হয়েছিল।
“মানসম্মত চিকিৎসা প্রোটোকল মেনেই অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রতিস্থাপনের পর রোগীর কার্ডিওজেনিক শক হয় এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি,” তারা জানায়।
কামিনী কমকারের বিষয়ে হাসপাতাল জানায়, প্রথমদিকে তার অবস্থা ভালো ছিল, কিন্তু পরে তিনি সেপটিক শক ও একাধিক অঙ্গ বিকলতায় আক্রান্ত হন, যা উন্নত চিকিৎসার পরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
“আমরা সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই মর্মান্তিক সময়ে শোকাহত পরিবারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি,” বিবৃতিতে আরও বলা হয়।